
অন্তরে তুমি
ছোট
শহর,
সরু
গলি,
ছায়াঘেরা উঠোন
আর
কুয়াশার চাদরে
মোড়া
এক
জীবন।
এমনই
এক
শহরের
একতলা
বাড়িতে বসবাস
করত
রিজভী
ভাইয়া,
তার
স্ত্রী
নীলা
ভাবি,
আর
রিজভীর
ছোট
ভাই
অর্ণব।
রিজভী
ছিলেন
ব্যবসায়ী, প্রায়শই শহরের
বাইরে
থাকতেন। সকালে
বেরোতেন, ফিরতেন
গভীর
রাতে।
আর
নীলা—সে ছিল এক
স্বপ্নবতী নারী।
শান্ত,
শিক্ষিতা, একজন
আদর্শ
ঘরণী।
তার
চোখে
ছিল
মায়া,
কণ্ঠে
স্নিগ্ধতা আর
আচরণে
একরকম
আকর্ষণ
যা
যে
কাউকে
আকৃষ্ট
করতে
পারতো।
অর্ণব
তখন
বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ
বর্ষে,
পড়াশোনার পাশাপাশি সাহিত্য চর্চাও
করত।
প্রথম থেকেই অর্ণবের সঙ্গে ভাবির সম্পর্ক ছিল ভীষণ মধুর। ভাবিকে সে সম্মান করত, আর নীলা ভাবি তাকে স্নেহ করতেন। এই সম্পর্ক ছিল এমন এক বন্ধন, যেখানে ছিল নির্ভরতা, বিশ্বাস এবং এক ধরনের অদ্ভুত প্রশান্তি।
দিনের
পর
দিন,
অর্ণবের দিন
শুরু
হতো
ভাবির
হাতের
চা
দিয়ে।
ভাবি
খুব
যত্ন
করে
তার
পড়ার
রুমটা
গুছিয়ে রাখতেন। একদিন,
দুপুরে
বই
নিয়ে
বসেছিল
অর্ণব
বারান্দায়। হঠাৎ
ভাবি
এসে
বললেন,
— "এই
যে,
তুমি
লেখালিখি করো,
আমাকে
তো
কোনো
দিন
কিছু
শোনালে
না।"
অর্ণব
একটু
লজ্জা
পেয়ে
বলল,
— "ভাবি,
আপনি
শুনতে
চাইলে
তো
বলতে
পারি।"
সেদিন
থেকে
ভাবিই
হলো
অর্ণবের শ্রোতা। কবিতা,
ছোটগল্প, না
বলা
স্বপ্ন—সব ভাবির কানেই
এসে
পড়ত।
আর
ভাবির
চোখের
প্রশংসা যেন
আরও
উৎসাহ
যোগাতো
অর্ণবকে।
কিন্তু
ধীরে
ধীরে
অর্ণব
টের
পেল,
সে
কেবল
ভাবির
প্রশংসায় মুগ্ধ
নয়—বরং ভাবি তার
মনের
এমন
এক
কোণায়
জায়গা
করে
নিয়েছেন, যেটা
কারো
জন্যে
কখনো
খোলা
হয়নি।
তবে
সে
কিছুই
বলেনি।
কী
বলবে?
ভাবি
তো
তার
ভাইয়ের স্ত্রী। এই
সম্পর্কের ভেতর
আর
যাই
থাকুক,
প্রেম
থাকবে
না—এটাই বাস্তব।
একদিন
সন্ধ্যাবেলা হালকা
বৃষ্টি
হচ্ছিল। বিদ্যুৎ নেই।
বারান্দায় মোমবাতির আলোয়
দু’জন বসে চা
খাচ্ছে।
ভাবি
হঠাৎ
বললেন,
— "তোমার
চোখ
দুটো
খুব
কথা
বলে
জানো?"
অর্ণব
অবাক
হয়ে
বলল,
— "কী
বলছে
আমার
চোখ?"
ভাবি
হেসে
বললেন,
— "বলা
যায়
না।
হয়তো
কিছু
লুকিয়ে রেখেছে!"
অর্ণব
গভীর
চোখে
তাকিয়ে বলল,
— "সব
কিছু
বলা
যায়
না
ভাবি।
কিছু
অনুভব
শুধু
অনুভবের মধ্যেই
ভালো
থাকে।"
নীলার
মুখ
গম্ভীর
হয়ে
গেল।
কিছু
একটা
বুঝে
ফেললেও,
তিনি
চুপ
থাকলেন।
অর্ণব িভাবছিলো আজকে ভাবির দুধ টিপে
দিবে ,ভাবির যোনিতে বাড়া ঢুকিয়ে দিবে কিন্তু হলো না।
দিন কাটে, সম্পর্ক বদলায় না
রিজভী
ভাই
আগের
মতোই
ব্যস্ত। পরিবার
সামলানো, সংসার
টিকিয়ে রাখা,
আর
নিজের
স্বপ্নপূরণে ব্যস্ত
তিনি।
অর্ণবও
বিশ্ববিদ্যালয় শেষ
করে
চাকরির
জন্য
প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু
মনে
এক
চাপা
যন্ত্রণা—যা
বলা
যায়
না,
তবু
ভুলেও
যায়
না।
একদিন,
রিজভী
ভাই
হঠাৎ
সিদ্ধান্ত নেন—অর্ণবকে ঢাকায় পাঠাবেন। সেখানে
চাকরির
একটা
সুযোগ
আছে।
ভাবির
চোখে
জল,
মুখে
হাসি।
— "তুমি
চলে
যাচ্ছো?
খুব
অভ্যাস
হয়ে
গিয়েছিল তোমাকে
নিয়ে।"
অর্ণব
আর
নিজেকে
ধরে
রাখতে
পারলো
না।
বলল,
— "ভাবি,
আপনি
জানেন,
আমি
কেন
আপনার
এত
কাছাকাছি?"
ভাবি
চোখ
সরিয়ে
নিলেন।
বললেন
না
কিছু।
— "আমি
হয়তো
ভুল
করেছি,
আপনাকে
আমার
মনের
ভেতরে
জায়গা
দিয়ে।"
ভাবির
গলা
ভারী
হয়ে
এল,
— "না
অর্ণব,
তুমি
ভুল
করোনি।
অনুভব
কখনো
ভুল
হয়
না।
কিন্তু
কিছু
অনুভব
শুধু
হৃদয়ে
রাখাই
ভালো।
বাস্তবতা বড়
কঠিন,
জানো
তো!"
সেই
রাতেই
অর্ণব
সিদ্ধান্ত নেয়—চলে যাবে। দূরে
গিয়ে
সব
ভুলে
যাবে।
সময়ের পরিবর্তন
ঢাকায়
চাকরি
শুরু
করলো
অর্ণব।
ব্যস্ততা, নতুন
পরিবেশ,
নতুন
জীবন।
তবু
প্রতিদিন রাতে
ঘুমানোর আগে
ভাবির
মুখটা
চোখে
ভেসে
ওঠে।
নীলা
ভাবিও
আগের
মতো
নেই।
সে
বুঝে
গেছে,
সংসার
মানে
শুধু
সামাজিক বন্ধন
নয়,
অনেক
সময়
আত্মত্যাগ। তার
চোখে
আজ
আরও
গভীরতা,
আরও
নিঃশব্দতা।
পাঁচ
বছর
পর
এক
পারিবারিক অনুষ্ঠানে অর্ণব
ফিরলো
শহরে।
অনেক
বদলে
গেছে
সে।
এখন
প্রতিষ্ঠিত, আত্মবিশ্বাসী একজন
মানুষ।
বাড়িতে ঢুকতেই
ভাবির
চোখে
জল।
— "তুমি
তো
একেবারে বদলে
গেছো
অর্ণব!"
— "আপনি
তো
আগের
মতোই
রয়ে
গেছেন
ভাবি।"
সন্ধ্যায় বাড়ির
ছাদে
দু’জন আবার একসঙ্গে বসলো।
— "তুমি কি এখনো
মনে
রাখো
সেসব
দিন?"
— "প্রতিদিন ভাবি।
স্মৃতি
কখনো
পুরনো
হয়
না।"
— "তোমার
জীবনেও
নিশ্চয় কারো
জন্য
জায়গা
হয়েছে?"
— "হয়নি।
কারণ
যেখানে
আপনি
থাকেন,
সেখানে
আর
কেউ
আসতে
পারে
না।"
নীলার
চোখে
জল,
কিন্তু
মুখে
হাসি।
— "তুমি জানো অর্ণব,
আমি
তোমাকে
সবসময়
সম্মান
করতাম,
ভালোবাসতাম… ঠিক
আমার
নিজের
মত
করে।
কিন্তু
আমাদের
সম্পর্কের একটা
সীমা
ছিল—যেটা আমরা কখনো
অতিক্রম করিনি।
সেটাই
আমাদের
সাহস।"
অর্ণব
বলল,
— "ভালোবাসা সব
সময়
স্পর্শে হয়
না
ভাবি,
অনেক
সময়
চোখে,
কথায়,
আর
আত্মত্যাগেই প্রকাশ
পায়।"
সেদিনের আকাশে
তারা
ছিল
অসংখ্য,
কিন্তু
অর্ণব
আর
নীলা
জানত—তারা কোনো দিন
এক
হতে
পারবে
না।
তবুও
তাদের
হৃদয়ে
ছিল
এক
চিরন্তন জায়গা—যেখানে "অন্তরে তুমি" লেখা ছিল
সাদা
অক্ষরে।
শেষ
এই
গল্প
ভালোবাসা, ত্যাগ,
নিষ্কলঙ্ক অনুভব
এবং
সম্পর্কের সীমারেখা মেনে
চলার
এক
অনবদ্য
চিত্র।
সব
প্রেমের পরিণতি
থাকে
না,
কিন্তু
কিছু
প্রেম
চিরকাল
বেঁচে
থাকে—হৃদয়ের গভীর কোনে,
নীরবে।